আফগানিস্তানের তালেবানের এক জ্যেষ্ঠ সদস্য ওয়াহিদুল্লাহ হাশিমি বলেছেনে, নারী ও পুরুষের একসঙ্গে কাজ করা উচিত নয়। তার মন্তব্যের পরপরই আন্তর্জাতিক মিডিয়া অঙ্গনে নারীর অধিকার ও তাদের প্রতিশ্রুতি নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
তার ওই বক্তব্য তালেবান সরকারের ‘কট্টর’ নীতির বহিঃপ্রকাশ। এই নীতি যদি বাস্তবায়িত হয় তাহলে দেশটির সরকারি অফিস, ব্যাংক, গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নারীদের চাকরির সুযোগ থাকবে না।
হাশিমি বলেন, নারীদের যেখানে খুশি সেখানে কাজ করার অধিকার দেওয়ার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ রয়েছে। তালেবান তাদের সংস্করণের শরিয়াহ সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করবে। শরিয়াহ আইন পুরুষ ও নারীদের এক ছাদের নিচে একসঙ্গে বসার বিষয়টি অনুমোদন দেয় না।
তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আফগানিস্তানে শরিয়াহ আইনব্যবস্থা আনার জন্য আমরা ৪০ বছর ধরে লড়াই করেছি। নারী ও পুরুষ একসঙ্গে কাজ করতে পারবে না। সেই সুযোগ নেই। অফিসে এসে আমাদের মন্ত্রণালয়ে তাদের কাজ করার অনুমতি নেই।
এদিকে তালেবান কাবুল নিয়ন্ত্রণের আগে থেকেই আফগানিস্তানের এক কোটি ৮০ লাখ মানুষ ত্রাণ সহায়তার ওপর নির্ভরশীল ছিলেন। আর তালেবানের হাতে দেশটির ক্ষমতা যাওয়ার পর সে সংখ্যা আরো বেড়েছে বলে ধারণা করছে জাতিসংঘ। এছাড়া অর্থ ও খাদ্য ঘাটতির কারণে এ মাসের শেষ দিকে খাদ্য সরবরাহ শেষ হয়ে যেতে পারে, যার ফলে দেশটির ১ কোটি ৪০ লাখের বেশি মানুষ অনাহারে পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করছে সংস্থাটি।
আরও পড়ুন: আফগান নারীদের সম্মান জানানোর আহ্বান
এ অবস্থায় আফগানিস্তানে মানবিক সঙ্কট এড়াতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ১০০ কোটি ডলার সহযোগিতা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সোমবার জেনেভায় আয়োজিত একটি সাহায্য সম্মেলনে এ তথ্য জানান জাতিসংঘ মহাসচিব।
গত ১৫ আগস্ট আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির পতনের পর দেশ দখল করে নেয় তালেবানরা। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সেনা সদস্যদের পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নেয়। এরমধ্যে দিয়ে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র ২০ বছরের আধিপত্য শেষ করেছে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির ভঙ্গুর অর্থনীতিতে বিপাকে পড়েছেন বিভিন্ন শ্রেণির ব্যবসায়ীরা, দিন দিন প্রকট হচ্ছে বেকার সমস্যা। এছাড়াও বিকল্প ব্যবস্থা না করে এ সিদ্ধান্ত নিলে পরিস্থিতি আরও বেগতিক হতে পারে বলে মত বিশ্লেষকদের।
গত ৬ সেপ্টেম্বর পুরো আফগানিস্তান দখলে নেওয়ার কথা জানায় তালেবান। আর ৭ সেপ্টেম্বর নিজ সদস্যদের নিয়ে অস্থায়ী সরকার গঠন করে গোষ্ঠীটি।