বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের জনগণকে ভিন্ন পথে পরিচালনা করতেই শহীদ জিয়াউর রহমানের কবর নিয়ে ইস্যু তৈরি করছে সরকার। এই সরকার করোনায় ব্যর্থ, ডেঙ্গুতে ব্যর্থ, মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। মানুষের আসল সমস্যা নিয়ে মনোযোগ না দিয়ে ভিন্ন পথে চিন্তাভাবনাকে পরিচালনা করছে তারা।
আজ সোমবার দুপুরে শহরের কালিবাড়ীর নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবর বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এ ইস্যুটি একটি কুরুচিকর ও অরাজনৈতিক। তিনি (জিয়াউর রহমান) স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন এবং শাহাদাত বরণের পর সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানেই পোস্টমর্টেম করে তাঁকে দাফন করা হয়েছে। এটি নিয়ে কোনো প্রশ্ন উঠতে পারে না। এ বিষয়টি ধ্রুবতারার মতো সত্য। লুই কানের নকশাটি ছিল পাকিস্তানি আমলের। এ নকশায় ওপর থেকে লক্ষ্য করলে দেখতে পারবেন এখানে পাকিস্তানের পতাকার চাঁদ তারার নকশা রয়েছে। আইয়ুব খানের আমলে এটাকে দ্বিতীয় রাজধানী করার চিন্তাধারা ছিল। এর পরে তো অনেক পরিবর্তন হয়েছে। গণভবন, স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বাসা তৈরি হয়েছে। মেট্রোরেলের বিশাল একটা অংশ এতে ঢুকেছে। দেশের জনগণকে ভিন্ন পথে পরিচালনা করতেই শহীদ জিয়ার কবর নিয়ে ইস্যু তৈরি করছে সরকার। এই সরকার করোনায় ব্যর্থ, ডেঙ্গুতে ব্যর্থ, মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। মানুষের আসল সমস্যা নিয়ে মনোযোগ না দিয়ে ভিন্ন পথে চিন্তাভাবনাকে পরিচালনা করছে তারা।’
মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া জেলে থাকায় তারেক রহমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দলের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি দলের মধ্যে থেকেই বিভিন্ন পদে ধারাবাহিকভাবে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। নির্বাসনে থেকেও তিনি অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, দলকে সুসংগঠিত করছেন। তাই দলের নেতৃত্ব নিয়ে কোনো প্রশ্নই আসে না। তিনিই আমাদের দলের নেতা। তাঁর নেতৃত্বেই আগামীতে আন্দোলন সংগ্রাম পরিচালিত হবে।
বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে বিভিন্ন মহলের কথার বিষয়ে মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিভিন্ন সময়ে চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে গেছে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাহাদাত বরণের পর অনেকেই মনে করেছিল বিএনপির অবস্থা বোধহয় শেষ। কিন্তু বিএনপি উঠে দাড়িয়েছিল এবং তিন তিনবার রাষ্ট্র পরিচালনায় এসেছে। গত ১২ বছর ধরে দেশ বড় ধরনের রাজনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ১৯৭১ সালে গণতন্ত্রের মাধ্যমে আমাদের যে অর্জন ছিল আওয়ামী লীগ সরকার তা নষ্ট করেছে।’
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন বা স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে বলতে গিয়ে আমি বলব যে দেশের সব ধরনের নির্বাচনের ওপরে দেশের মানুষের আস্থা উঠে গেছে। বিগত সময়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনেই আমরা এর প্রতিফলন দেখেছি। গণতন্ত্রের প্রথম যে স্তম্ভ, সেটিকেই সরকার অবৈধভাবে নিজেদের মতো করে পরিচালনা করে অবৈধভাবেই ক্ষমতায় বসে রয়েছে।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার সম্পর্কে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কথা শুনলে মনে হয় যেন তিনি সরকারের সব চাওয়া-পাওয়া, আদেশ-নিষেধ মানার জন্যেই বসে রয়েছেন। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আমরা যাব কিনা দলগতভাবে আমরা সে সিদ্ধান্ত এখনো নেইনি।’
সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিন, সহসভাপতি ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শরিফসহ দলের অন্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।