জুনায়েদ বাবুনগরীর জানাজায় মানুষের ঢল, দাফন সম্পন্ন

2115
শেয়ার করতে ক্লিক করুন

চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসায় দীর্ঘ দিন শিক্ষকতা করেছেন আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ছিলেন সেই মাদ্রাসার শিক্ষা পরিচালক ও হেফাজতে ইসলামের আমির। জানাজার জন্য আজ বৃহস্পতিবার রাতে সেই মাদ্রাসায় শেষবারের মতো আনা হয় দেশের বিশিষ্ট এই ইসলামি চিন্তাবিদকে।

জানাজায় অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে জড়ো হন লক্ষাধিক আলেম-ওলামা, ছাত্র ও সাধারণ মুসল্লি। প্রিয় উস্তাদের নিথর দেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁর ছাত্ররা। কাঁদেন সহকর্মী ও সাধারণ মুসল্লিরা।

রাত ১১টা ২০ মিনিটে জুনায়েদ বাবুনগরীর জানাজা পড়ান তাঁর মামা হেফাজতে ইসলামের ভারপ্রাপ্ত আমির মাওলানা মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী।মাদ্রাসার ভেতরে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় ভীড়ের কারণে মরদেহ বহনকারী কফিন মাদ্রাসা মাঠ থেকে স্থানীয় ডাকবাংলোতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকেই জানাজা পরিচালিত হয়।

জানাজা শেষে হাটহাজারী মাদ্রাসায় জুনায়েদ বাবুনগরীর দাফন সম্পন্ন হয়। এর আগে গ্রামের বাড়িতে নাকি হাটহাজারী মাদ্রাসা কবরস্থানে তাঁর দাফন হবে—তা নিয়ে আলোচনা চলছিল। পরে বৈঠক করে গ্রামের বাড়ি ফটিকছড়ি উপজেলার বাবুনগর গ্রামে দাফনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে জানাজা শেষে নিজের প্রিয় মাদ্রাসায় শায়িত হন জুনায়েদ বাবুনগরী।

হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

চট্টগ্রাম মহানগর হেফাজতে ইসলামের সদস্য আনোয়ার হোসেন বলেন, কয়েক দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। আজ সকালে অসুস্থতা বেশি হলে অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে চট্টগ্রামে আনা হয়। সিএসসিআর হাসপাতালে আনার পথে তিনি ইন্তেকাল করেন। কিডনিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ছিলেন জুনায়েদ বাবুনগরী।

চট্টগ্রামের সিএসসিআর হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালাহউদ্দিন মাহমুদ বলেন, হুজুরকে হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসকেরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেন তিনি মারা গেছেন।

জুনায়েদ বাবুনগরীর সহযোগী ও খাদেম এইচ এম জুনাইদ বৃহস্পতিবার পৌনে ১টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে বাবুনগরীর মৃত্যুর খবর জানান। তিনি এ সময় বলেন, ‘হুজুর আর এই দুনিয়াতে নেই। আমরা সবাই এতিম হয়ে গেলাম। আপনারা সবাই হুজুরের জন্য দোয়া করুন।’

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসায় দীর্ঘ দিন ধরে শিক্ষকতা করে আসছিলেন জুনায়েদ বাবুনগরী।

গত বছরের নভেম্বরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির নির্বাচিত হন আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। এর আগে তিনি এ সংগঠনের মহাসচিব পদে ছিলেন। ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠা হওয়ার সময় থেকেই হেফাজতে ইসলামের আমিরের দায়িত্বে থাকা আল্লামা শাহ আহমদ শফী ইন্তেকাল করলে তাঁর স্থলাভিষিক্ত নির্বাচিত হন তিনি। গত ২৫ এপ্রিল কয়েকটি কারণে সে কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। গত ৭ জুন ৩৩ সদস্যের নতুন কমিটিতে আবারও হেফাজতে ইসলামের আমির নির্বাচিত হন জুনায়েদ বাবুনগরী।

১৯৫৩ সালের ৮ অক্টোবর চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার বাবুনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন জুনায়েদ বাবুনগরী। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, পাঁচ মেয়েসহ অসংখ্য ছাত্র ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

জুনায়েদ বাবুনগরী বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সহসভাপতি, চট্টগ্রাম নুরানি তালিমুল কুরআন বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং মাসিক মুঈনুল ইসলামের প্রধান সম্পাদক ছিলেন। এ ছাড়া তিনি নাজিরহাট বড় মাদ্রাসার মুতাওয়াল্লি, মাসিক দাওয়াতুল হকের পৃষ্ঠপোষক, ইনসাফ২৪.কম ও কওমিভিশন.কমের প্রধান উপদেষ্টাসহ কয়েকটি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের নেতৃস্থানীয় পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।

গত বছরের নভেম্বরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির নির্বাচিত হন আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। এর আগে তিনি এ সংগঠনের মহাসচিব পদে ছিলেন। ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠা হওয়ার সময় থেকেই হেফাজতে ইসলামের আমিরের দায়িত্বে থাকা আল্লামা শাহ আহমদ শফী ইন্তেকাল করলে তাঁর স্থলাভিষিক্ত নির্বাচিত হন তিনি।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন