আগামীকাল ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। এ দিবসটি ঘিরে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা থাকলেও তা ঠেকাতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি ও চেষ্টা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শনিবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে নিরাপত্তা বিষয়ক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
ডিএমপি কমিশনার জানান, জঙ্গিরা থেমে নেই। বাংলাদেশে যাতে আর একটিও জঙ্গি হামলার ঘটনা না ঘটে সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘গত পরশুদিন আমরা জঙ্গি সংগঠনের একজন লিডিং সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছি। তিনি বোমা বিশেষজ্ঞ, অনলাইনে তিনি বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ দিতেন। নারায়ণগঞ্জের যে শক্তিশালী বোমা উদ্ধার হয়েছে সেটাও সরাসরি তার তত্ত্বাবধানে তৈরি করা হয়।’
‘এই মাসে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জঙ্গি বা নাশকতাকারী গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা যে থেমে নেই এতটুকু বলা যায়, তবে আমরা আমাদের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছি, যাতে বাংলাদেশ আরেকটি ঘটনাও না ঘটে। বর্তমানে তৎপর জঙ্গিরা ছোট ঘটনা ঘটিয়ে বিদেশি মিডিয়ায় আসতে চায়। সে জন্য তারা ১৫ আগস্টের মতো ইভেন্টকে বেছে নিতে পারে। তবে যারা এই তৎপরতা চালাচ্ছিল তাদের পুরো গ্রুপটি ধরা পড়েছে বলে দাবি করেন শফিকুল ইসলাম।’
তিনি বলেন, ‘এখন যারা জঙ্গি হামলা করার চেষ্টা করছে, তাদের প্রধান টার্গেট হলো বিদেশি মিডিয়ায় আসা। ছোট একটি ঘটনা ঘটিয়ে যাতে আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় আসতে পারে। এক্ষেত্রে ১৫ আগস্ট তাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তাৎপর্যপূর্ণ।
‘১৫ আগস্ট ভেন্যুর আশপাশে না হোক, ভেন্যু থেকে ২ কিলোমিটার দূরেও যদি তারা বোমা ফাটাতে পারে তাহলে আন্তর্জাতিক মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। ফলে এই দিক বিবেচনায় তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।’
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘যে গ্রুপটি এটা ডেভলপ করে আসছিল। দেখেছেন, প্রথমে ৫টি ট্রাফিক পয়েন্টে ছোট ছোট বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল। তারপর ইনপ্রুভ ডিভাইস এনেছিল। সবশেষ শক্তিশালী বোমা তারা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিল। ধাপে ধাপে তারা উন্নতি করছিল। সেই পুরা গ্যাংটা ধরা পড়েছে।’
১৫ আগস্ট ঘিরে জঙ্গি তৎপরতার বিষয়ে কমিশনার বলেন, ‘আমরা আশংকার জায়গাটা উড়িয়ে দিচ্ছি না। এধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য সর্বোচ্চ মেধা ও চেষ্টা দিয়ে আমরা তৎপর রয়েছি।’
যুদ্ধ করতে আফগানিস্তান যাচ্ছে কিছু বাংলাদেশি
জঙ্গিদের নজরদারির জন্য সাইবার তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে বলে জানান কমিশনার। তিনি বলেন, এখন সারা পৃথিবীর সাইবার ওয়ার্ল্ডের মধ্যে বন্দি হয়ে গেছে। জঙ্গিরাও সাইবার মিডিয়ামগুলো ব্যবহার করে তাদের রিক্রুটমেন্ট করার চেষ্টা করছে। সাম্প্রতিক সময়ে আমরা যে প্রবণতাগুলো দেখছি তা হলো, আফগানিস্তানের যাওয়ার জন্য আহ্বান করা হচ্ছে, তালেবানদের পক্ষ থেকে।
‘দেশ থেকে তালেবানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য অলরেডি কিছু মানুষ হিজরত করেছে। আমরা ধারণা করছি, কিছু মানুষ ইন্ডিয়ায় ধরা পড়েছে। আর কিছু মানুষ হেঁটে বা অন্য উপায়ে আফগানিস্তানের পৌঁছানোর চেষ্টা করছে।’
তিনি বলেন, ‘শুধু আমরা না, সাইবার ওয়ার্ল্ডে বিভিন্ন সংস্থা তাদের মনিটর করার চেষ্টা করছে। যখনই সন্দেহভাজন কিছু পাওয়া যায়, আমাদেরকে জানানো হয়। যত গোয়েন্দা সংস্থা আছে সবাই তৎপর আছে।’