হংকংয়ে চীনা কর্মকর্তাদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক কর্মকর্তা ও কয়েকটি সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে চীন। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
চীনের দেওয়া নিষেধাজ্ঞায় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী উইলবার রসের নাম আছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
কয়েকদিনের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েন্ডি শেরম্যানের চীন সফরে যাওয়ার কথা। তার আগেই চীনের এই পালটা নিষেধাজ্ঞা এলো।
চীন নিয়ন্ত্রিত হংকংয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর দমনপীড়নে ভূমিকা রাখার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি সে শহরে থাকা কয়েকজন চীনা কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল।
এ ছাড়া হংকংয়ে ব্যবসায় পরিচালনার ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান ঝুঁকির বিষয়ে মার্কিন ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে দিয়েছে ওয়াশিংটন।
হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থিদের ব্যাপক বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে চীন ওই সেখানে গত বছর জাতীয় নিরাপত্তা আইন চালু করে। এই আইনে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন, বিদ্রোহ এবং বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশ করাকে অপরাধ সাব্যস্ত করা হয়। এবং বলা হয়—দোষীদের সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল শুক্রবার জানায়, ‘ভিত্তিহীনভাবে হংকংয়ের ব্যবসায়িক পরিবেশ নষ্ট করার’ উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সম্প্রতি নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এবং যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাকে ‘আন্তর্জাতিক আইন এবং যেসব মৌলিক নীতির ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পরিচালিত হয় তার চরম লঙ্ঘন’ বলে অ্যাখ্যা দেয় চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এবং আরও জানায়, উইলবার রসসহ সাত মার্কিন কর্মকর্তা ও সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেবে চীন।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনে বাণিজ্যমন্ত্রী থাকার সময় উইলবার রস হুয়াওয়ে ও জেডটিই’র মতো চীনা শীর্ষ টেলিকম প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন মার্কিন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাণিজ্য করতে গেলে আগে লাইসেন্স নেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছিলেন।
চীন গতকাল আরও যাঁদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তাঁদের মধ্যে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের চীন বিষয়ক পরিচালক সোফি রিচার্ডসন; যুক্তরাষ্ট্র-চীন অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা পর্যালোচনা কমিশনের চেয়ার ক্যারোলিন বার্থোলোমিউ এবং ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের অ্যাডাম কিংও আছেন।
এদিকে, চীনা নিষেধাজ্ঞায় যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের নড়চড় হবে না জানিয়ে হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব জেন সাকি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘বেসামরিক নাগরিক, প্রতিষ্ঠান এবং নাগরিক সমাজের সংগঠনগুলোকে শাস্তি দেওয়ার মাধ্যমে বেইজিং যেভাবে রাজনৈতিক বার্তা দেয়—এই নিষেধাজ্ঞা তার সাম্প্রতিক নজির।’
এর আগে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন বিদায়ী পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওসহ ট্রাম্প প্রশাসনের ২৭ শীর্ষ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।
চীনের ওই পদক্ষেপকে ‘নিস্ফলা ও বিদ্বেষমূলক’ অ্যাখ্যা দিয়েছিল জো বাইডেন প্রশাসন।