দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরো ১৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে করে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৮ হাজার ৮৫১। এর আগে গতকাল ১৮৭ জনের মৃত্যুর পর, এই সংখ্যা আজ কিছুটা কমেছে। এর আগে একদিনে সর্বোচ্চ ২৩১ জনের মৃত্যু হয়েছিল গত ১৯ জুলাই।
ছুটির মধ্যে নমুনা পরীক্ষা কমে আসায় এক দিনে শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা এক ধাক্কায় অনেকটা কমে এসেচে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৬ হাজার ৩৬৪ জন। তবে, শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমলেও সংক্রমণের মাত্রা আসলে কমেনি। ২৪ ঘন্টায় শনাক্তের হার বেড়ে ৩১ দশমিক ০৫ শতাংশ হয়েছে।
এতে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ ৪৬ হাজার ৫৬৪ জন। এর আগে গত ১২ জুলাই একদিনে সর্বোচ্চ ১৩ হাজার ৭৬৮ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল।
এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৯ লাখ ৭৮ হাজার ৬১৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরো ৯ হাজার ৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ২০ হাজার ৪৯৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ০৫ শতাংশ।
শুক্রবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তেরর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছর ৮ মার্চ; প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রথম মৃত্যুর আড়াই মাস পর গত বছরের ১০ জুন মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ছাড়ায়। এরপর ৫ জুলাই ২ হাজার, ২৮ জুলাই ৩ হাজার, ২৫ অগাস্ট ৪ হাজার, ২২ সেপ্টেম্বর ৫ হাজার ছাড়ায় মৃতের সংখ্যা।
এরপর কমে আসে দৈনিক মৃত্যু। ৪ নভেম্বর ৬ হাজার, ১২ ডিসেম্বর ৭ হাজারের ঘর ছাড়ায় মৃত্যুর সংখ্যা। এ বছরের ২৩ জানুয়ারি ৮ হাজার এবং ৩১ মার্চ মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৯ হাজার ছাড়ায়।
সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর ১৫ দিনেই এক হাজার কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যু ঘটলে গত ১৫ এপ্রিল মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর পরের এক হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটাতে মাত্র দশ দিন সময় নেয় করোনাভাইরাস; মোট মৃতের সংখ্যা ১১ হাজার ছাড়িয়ে যায় ২৫ এপ্রিল।
তার ১৬ দিন পর ১১ মে করোনাভাইরাসে মৃত্যু ১২ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তার এক মাস পর ১১ জুন তা ১৩ হাজার ছাড়িয়েছিল। এর ১৫ দিন পর ২৬ জুন এই সংখ্যা ১৪ হাজার ছাড়িয়ে যায়। ৪ জুলাই ১৫ হাজার ছাড়ায় মৃত্যু। মাত্র ছয় দিন পরে গত ৯ জুলাই মোট মৃত্যুর সংখ্যা ১৬ হাজার ছাড়ায়। গত ১৪ জুলাই এ সংখ্যা ১৭ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর পাঁচ দিনের মাথায় ১৯ জুলাই মৃত্যু ছাড়ায় ১৮ হাজার।
পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হওয়ায় ২২ জুন থেকে ঢাকাকে সারা দেশ থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সেই প্রচেষ্টায় ঢাকার আশপাশের চারটি জেলাসহ মোট সাতটি জেলায় জরুরি সেবা ছাড়া সব ধরনের চলাচল ও কার্যক্রম ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।
তবে এরপরও করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ২৮ জুন থেকে সারা দেশে সব গণপরিবহন ও মার্কেট-শপিং মল বন্ধ করা হয়েছে। গত ১ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে কঠোর লকডাউন, বন্ধ রয়েছে সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। সর্বাত্মক লকডাউন ১৪ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়। ঈদ উপলক্ষে ১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত লকডাউন শিথিলের ঘোষণা দেয় সরকার।