বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা যাতে নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে নিজ দেশে ফিরে যেতে পারে, সে জন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন আয়োজিত ‘মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি : সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের অবস্থা’ শীর্ষক এক ভার্চ্যুয়াল আলোচনায় গতকাল মঙ্গলবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ আশা প্রকাশ করেন। জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
ভার্চ্যুয়াল আলোচনার সহ-আয়োজক ছিল জাতিসংঘে কানাডা, সৌদি আরব ও তুরস্কের স্থায়ী মিশন এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘গ্লোবাল সেন্টার ফর রেসপনসিবিলিটি টু প্রটেক্ট’। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা আলোচনা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৫তম অধিবেশনের সভাপতি ভলকান বজকির উদ্বোধনী বক্তা হিসেবে তার সাম্প্রতিক কক্সবাজার সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন মূল বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন।
ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য নতুন সৃষ্ট আবাসন সুবিধার কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, এই আবাসন ব্যবস্থা জাতিসংঘ ও উন্নয়ন সহযোগীরা যথাযথভাবে পরিদর্শন ও মূল্যায়ন করে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। এখানে তাদের রোহিঙ্গাবিষয়ক কর্মসূচির বাস্তবায়ন কাজ শুরু করেছে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ও মানবাধিকার কাউন্সিলসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গা ইস্যুটিকে সর্বদা জাগ্রত রাখতে অব্যাহতভাবে যেসব প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছে, তা উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পাশাপাশি এ বিষয়ে যথোপযুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা পরিষদের ঘাটতির কথা তুলে ধরেন তিনি। আব্দুল মোমেন বলেন, নিরাপত্তা পরিষদ জাতিসংঘ সনদ অনুযায়ী তাদের দায়বদ্ধতা পরিপালন করবে বলে তিনি আশা করেন। তার প্রত্যাশা, নিরাপত্তা পরিষদ রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে অনতিবিলম্বে ও জরুরিভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, যাতে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী তাদের নিজভূমিতে নিরাপদে ও মর্যাদাপূর্ণভাবে ফিরে যেতে পারে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপের পাশাপাশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আঞ্চলিক সংস্থা, দেশ ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করার জন্য অনুরোধ জানান।
আলোচকেরা রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই সমাধানে তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের মানবীয় উদারতার ভূয়সী প্রশংসা করেন তারা। সবাই এ সমস্যার মূল কারণ খুঁজে বের করে তা সমাধানের কথা বলেন। তারা উল্লেখ করেন, এ সমস্যার শিকড় মিয়ানমারে নিহিত। প্যানেল আলোচকেরা মিয়ানমারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিতে দায়বদ্ধতা নিরূপণের চলমান প্রক্রিয়ার প্রতি সমর্থন জানান।