করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ ও জাপান। একইসঙ্গে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় উভয়পক্ষ একযোগে কাজ করবে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকির এক বৈঠকে এসব আলোচনা হয়।
বুধবার (৯ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এই বৈঠকে তারা দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তারা ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জাপান সফরকে স্মরণ করেন, যে সফর দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিল।
প্রতিমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদ সুগার অংশগ্রহণের জন্য গভীর প্রশংসা জানান। উভয়পক্ষ ২০২২ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পঞ্চাশতম বার্ষিকী উদযাপনে সম্মত হন।
বৈঠকে প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, কোভিড মহামারি সবার জন্য এক অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। কোভিড চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জাপান সরকারের সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানান তিনি।
মহামারি মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত উদ্যোগের বিষয়ে জাপানি রাষ্ট্রদূতকে অবহিত করেন প্রতিমন্ত্রী। কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য জাপানের কাছ থেকে অব্যাহত সহায়তা চান।
জাপানি রাষ্ট্রদূত মহামারি চলাকালেও বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ব্যাপক প্রশংসা করেন। একইসঙ্গে কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশকে অব্যাহত সহায়তার আশ্বাস দেন।
বৈঠকে প্রতিমন্ত্রী জানান, ১১ লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে যদি নিজ ভূমিতে ফিরে যাওয়ার সুযোগ না পায়, তবে এটি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতায় বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
তিনি রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের অভ্যন্তরে অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে জাপানকে ভূমিকা নেয়ার আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য জাপানের অব্যাহত সহায়তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
বৈঠকে প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম আশা করেন, বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট (বিগ-বি) উদ্যোগ মানসম্মত অবকাঠামো উন্নয়নে সহযোগিতা ত্বরান্বিত করবে৷ একইসঙ্গে বাংলাদেশে আরও জাপানি বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করবে।
এই উদ্যোগ আঞ্চলিক যোগাযোগকে জোরদার করবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তারা জাপানী অর্থায়নে নির্মিত বড় উন্নয়ন প্রকল্পগুলির অগ্রগতিও পর্যালোচনা করেন।