করোনাভাইরাসের উৎস নিয়ে আরও তথ্য দিতে চীনকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বাধ্য করতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন সংস্থাটির এক শীর্ষ কর্মকর্তা। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
ডব্লিউএইচওর জরুরি কার্যক্রমবিষয়ক পরিচালক মাইক রায়ান গতকাল সোমবার জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন।
সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, করোনার উৎসসম্পর্কিত আরও তথ্য দিতে ডব্লিউএইচও কীভাবে চীনকে বাধ্য করবে? জবাবে মাইক রায়ান করোনার উৎস নিয়ে আরও তথ্য দিতে চীনকে বাধ্য করার ক্ষেত্রে ডব্লিউএইচওর অক্ষমতার কথা অকপটে স্বীকার করেন। মাইক রায়ান বলেন, ‘এ বিষয়ে কাউকেই বাধ্য করার ক্ষমতা ডব্লিউএইচওর নেই।’
এ প্রসঙ্গে মাইক রায়ান আরও বলেন, করোনার উৎস জানার প্রচেষ্টায় তাঁরা সব সদস্যরাষ্ট্রের পূর্ণ সহযোগিতা, সমর্থন ও তথ্যের জোগান প্রত্যাশা করেন।করোনাভাইরাসের উৎপত্তি কীভাবে, কোথা থেকে হলো, তা বোঝার জন্য ডব্লিউএইচও পরবর্তী পর্যায়ে প্রয়োজনীয় গবেষণার বিষয়ে প্রস্তাব দেবে বলে জানান তিনি।
করোনার উৎস নিয়ে নানা তত্ত্ব রয়েছে। যেমন এ ভাইরাস প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়েছে। কিংবা করোনা চীনের উহানের ল্যাব থেকে ছড়িয়েছে। করোনার উৎস তদন্তে চলতি বছরের শুরুর দিকে ডব্লিউএইচওর একটি বিশেষজ্ঞ দল চীন সফরে গিয়েছিল। তবে বিশেষজ্ঞ দল জানায়, তারা চাওয়া অনুযায়ী চীনের কাছ থেকে সব তথ্য পায়নি। ডব্লিউএইচওর বিশেষজ্ঞ দলের এমন বক্তব্যের পর এ বিষয়ে চীনের স্বচ্ছতা নিয়ে আগে থেকে থাকা প্রশ্ন আরও জোরালো হয়।
করোনার উৎস নিয়ে এখন জোর বিতর্ক চলছে। সম্প্রতি দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের খবরে বলা হয়, ২০১৯ সালের নভেম্বরে চীনের উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির তিনজন গবেষক অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসাসেবা নিয়েছিলেন। করোনা প্রাদুর্ভাবের বিষয়ে চীনের তথ্য প্রকাশের আগেই এ ঘটনা ঘটেছিল।
করোনা প্রাদুর্ভাব ছড়ানোর কিছু আগে তিনজন গবেষকের অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে যাওয়া নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন নাকচ করেছে চীন। চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়, এ প্রতিবেদন পুরোপুরি অসত্য। ল্যাব থেকে করোনা ছড়ানোর ভুয়া তত্ত্ব এখনো প্রচার করে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। পরে তা মহামারি আকারে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। করোনায় এখন পর্যন্ত বিশ্বের প্রায় ১৭ কোটি ৪৩ লাখ মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন। মারা গেছেন প্রায় সাড়ে ৩৭ লাখ মানুষ। উৎপত্তির পর প্রায় দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত করোনার উৎস সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।