চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের শুরুতে ব্যাংক খাত থেকে সরকার যে পরিমাণ ধার করেছিল, তার চেয়ে বেশি পুরোনো ধারের টাকা পরিশোধ করেছে। তবে অর্থবছরের শেষের দিকে এসে ঋণ নেওয়া শুরু করেছে সরকার। ফলে গত ২০ মে পর্যন্ত সরকারের প্রকৃত ব্যাংকঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা। তবে ব্যাংক খাতে সরকারের ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে সরকার ব্যাংক খাত থেকে ৮৪ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে। পরে তা সংশোধন করে ৮২ হাজার কোটি টাকা করা হয়।
জানা যায়, করোনার কারণে মানুষের সঞ্চয়প্রবণতা বেড়ে গেছে। এর ফলে ব্যাংকগুলোতে যেমন তারল্য বাড়ছে, একইভাবে সঞ্চয়পত্র বিক্রিও হু হু করে বেড়েছে। আর সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের তারল্য সংস্থান হওয়ায় সরকারও সেভাবে ব্যাংকঋণমুখী হচ্ছে না। ফলে ২০ মে পর্যন্ত ব্যাংক থেকে অর্থবছরের লক্ষ্যের ৫ শতাংশ অর্থও নেয়নি সরকার। আর করোনায় বেসরকারি ও সরকারি-উভয় খাত ব্যাংকঋণ-নির্ভরতা কমিয়ে দেওয়ার ব্যাংকগুলো অলস তারল্য নিয়ে বিপাকে পড়েছে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, নতুন অর্থবছরে ব্যাংক খাত থেকে ঋণের লক্ষ্য আরও কমিয়ে আনছে সরকার। আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে তা কমিয়ে ৭৬ হাজার কোটি টাকা করা হতে পারে। আর সঞ্চয়পত্রে চলতি অর্থবছর ২০ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও মার্চ পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে ৩৩ হাজার ২০৩ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছর সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণের লক্ষ্য আরও বাড়ানো হতে পারে। সে ক্ষেত্রে সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে সরকার ৩২ হাজার কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্য নির্ধারণ করতে পারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংক ব্যবস্থায় সরকারের মোট ঋণ স্থিতির মধ্যে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে রয়েছে ১ লাখ ৬২ হাজার ৬৪৭ কোটি টাকা। বাকি ১৯ হাজার ৮০৬ কোটি টাকা ধার নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে।