করোনার উৎস নিয়ে দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সত্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
গতকাল সোমবার হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদন নিয়ে এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, করোনার উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত হতে আরও তথ্য দরকার।
জেন সাকি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আশা করে যে করোনা মহামারির উৎস অনুসন্ধানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) আরও স্বচ্ছ তদন্তের বিষয়ে অগ্রসর হতে পারে।
করোনার উৎস নিয়ে অপ্রকাশিত মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে গত রোববার একটি খবর প্রকাশ করে দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। খবরে বলা হয়, ২০১৯ সালের নভেম্বরে চীনের উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির তিনজন গবেষক অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসাসেবা নিয়েছিলেন। করোনা প্রাদুর্ভাবের বিষয়ে চীনের তথ্য প্রকাশের আগেই এ ঘটনা ঘটেছিল।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানায়, চীনা ল্যাবের কতজন গবেষক আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের অসুস্থতার সময়, তাঁদের হাসপাতালে যাওয়া, চিকিৎসাসেবা নেওয়া প্রভৃতি সম্পর্কে নতুন করে বিস্তারিত তথ্য রয়েছে মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে। করোনাভাইরাস ল্যাব থেকে ছড়িয়েছে কি না, সে সম্পর্কে বিস্তারিত তদন্তের প্রয়োজনের প্রতি এ প্রতিবেদন গুরুত্বারোপ করতে পারে।
করোনা প্রাদুর্ভাব ছড়ানোর কিছু আগে উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির তিনজন গবেষক অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে যাওয়া নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন নাকচ করেছে চীন। গতকাল চীনের পক্ষ থেকে এই খবর নাকচ করা হয় বলে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়। চীনের ভাষ্য, প্রতিবেদনটি পুরোপুরি অসত্য।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃত্বাধীন তদন্ত দল গত ফেব্রুয়ারিতে উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি পরিদর্শন করে। পরিদর্শন শেষে তদন্ত দল এ মর্মে উপসংহারে আসে যে ল্যাব থেকে করোনা ছড়ানোর বিষয়টি একেবারেই অসম্ভব। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ, ল্যাব থেকে করোনা ছড়ানোর তত্ত্ব এখনো প্রচার করে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
করোনার উৎপত্তির সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর প্রশাসন বলেছিল যে তাদের সন্দেহ, চীনা ল্যাব থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে থাকতে পারে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে চীন।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। পরে তা মহামারি আকারে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। করোনায় এখন পর্যন্ত বিশ্বের প্রায় ১৬ কোটি ৮০ লাখ মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন। মারা গেছেন প্রায় ৩৪ লাখ ৮৭ হাজার মানুষ। উৎপত্তির পর প্রায় দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত করোনার উৎস সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা।