যুদ্ধবিরতির পর ফিলিস্তিনে ত্রাণের প্রথম চালান পৌঁছেছে। ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের কয়েক ঘণ্টা পর সেখানে ত্রাণ পৌঁছাল। এ ছাড়া যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর হাজারো ফিলিস্তিনি আশ্রয়শিবির থেকে বাড়ি ফিরছে। খবর বিবিসির।
যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর মিসর, গাজা ও ইসরায়েলের সীমান্তের মধ্যকার সংযোগস্থল কেরাম শালোম খুলে দিয়েছে ইসরায়েল। এ সীমান্ত দিয়ে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সাহায্য সংস্থার ত্রাণের ট্রাক ঢুকছে গাজায়। এসব ট্রাকে খাবার, জ্বালানি ও ওষুধ রয়েছে।
জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ বলেছে, এই এলাকার এক লাখের বেশি মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছিল। সেখানকার আট লাখ মানুষ খাবার পানির সংকটে রয়েছে।
এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মুখপাত্র মার্গারেট হ্যারিস বলেন, হাজারো আহত মানুষকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে গিয়ে এই এলাকার স্বাস্থ্যব্যবস্থা ইতিমধ্যে ঝুঁকির মুখে পড়েছে। এই এলাকায় স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসাসরঞ্জাম দ্রুত ঢুকতে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি।
ইসরায়েলের বিমান হামলায় ফিলিস্তিনের শত শত বাড়ি ধ্বংস হয়েছে। ফিলিস্তিনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই পুনর্নির্মাণ কাজ করতে কয়েক বছর সময় লেগে যেতে পারে। যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠতে কয়েক কোটি মার্কিন ডলার প্রয়োজন। ফিলিস্তিনের এ এলাকায় করোনাভাইরাসও ছড়িয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জাতিসংঘের সংস্থা প্যালেস্টিনিয়ান রিফিউজি বলেছে, সাহায্যের জন্য তাদের ৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার প্রয়োজন। গাজার গৃহায়ণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১ হাজার ৮০০ বাড়ি বসবাসের অনুপযোগী হয়েছে। এ ছাড়া এক হাজারটি বাড়ি ধ্বংস হয়েছে।
জেরুজালেমের আল-আকসায় ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলিদের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এই সংঘর্ষের পরে তীব্র আকার ধারণ করে। টানা সংঘর্ষ চলে ১১ দিন। এতে আড়াই শর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে এক হাজারের বেশি মানুষ, যাদের অধিকাংশই গাজা উপত্যকার বাসিন্দা। আহত এই ব্যক্তিদের চিকিৎসা দিতে করিডর সৃষ্টি করে তাদের সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ দিতে আহ্বান জানিয়েছে ডব্লিউএইচও।
এদিকে যুদ্ধবিরতির পর দুই পক্ষ—হামাস ও ইসরায়েল—নিজেদের বিজয়ী ঘোষণা করেছে। ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের বাসিন্দারা এই যুদ্ধবিরতি উদ্যাপনও করেছে। তবে একই সঙ্গে উদ্বেগও প্রকাশ করেছে তারা। তাদের মতে, দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু একটা সময়ের ব্যাপার মাত্র।