প্রথম আলোর সিনিয়র সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে সচিবালয়ে প্রায় ছয় ঘণ্টা আটকে রেখে ‘হেনস্তা করার’ অভিযোগ এনে তাতে ‘জড়িত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের’ বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন তার স্বামী মনিরুল ইসলাম মিঠু। ‘গুরুত্বপূর্ণ সরকারি নথি চুরির চেষ্টা এবং মোবাইলে ছবি তোলার’ অভিযোগে রোজিনাকে গ্রেপ্তার দেখানোর পর সোমবার গভীর রাতে শাহবাগ থানায় এ কথা বলেন তার স্বামী।
সচিবালয়ে রোজিনাকে ‘হেনস্তা করার’ ঘটনা বর্ণনা করে মিঠু বলেন, ‘আমরা আইনি পদক্ষেপ নেব। আমরা কাউন্টার মামলা করব একটা।’
মামলায় কী অভিযোগ করবেন- এই প্রশ্নে রোজিনার স্বামী বলেন, ‘তার ব্যাগের ভেতরে কত কিছু ছিল। টাকাপয়সা ছুঁড়ে ফেলে দিছে, আমিওতো ব্যবসা করি। শারীরিকভাবে হেনস্তা হয়েছে। এখানে ওখানে চামড়া উঠে গেছে। তাকে গলা চেপে ধরেছে, তাকে ফেলে দিয়েছে। তার ব্যাগ যখন কেড়ে নিয়েছে, হাত মোচড় দিয়েছে, এখানে (হাতে) লাল হয়ে আছে।’
এর আগে সোমবার দুপুরের পর স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিবের একান্ত সচিব মো. সাইফুল ইসলাম ভূঞার কক্ষে রোজিনাকে আটক করার পর প্রায় সাড়ে ৫ ঘণ্টা সেখানে তাকে আটকে রাখা হয়। রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব শিব্বির আহমেদ বাদী হয়ে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে মামলা করেন তার বিরুদ্ধে।
রোজিনার বরাতে মিঠু জানান, সচিবালয়ের ওই কক্ষে সে সময় তিনজন পুরুষ এবং একজন নারী ছিলেন, যারা তাকে ‘হেনস্তা’ করেন।
সচিবালয়ে আটক অবস্থায় সোমবার সন্ধ্যায় রোজিনা অসুস্থ হয়ে পড়লে সাংবাদিকরা তাকে হাসপাতালে নিতে বলেছিলেন, তবে কর্মকর্তারা তাতে সাড়া দেননি। এরপর রাত পৌনে ১২টার দিকে মামলা করার খবর দিয়ে পুলিশ রোজিনাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে চাইলেও পরিবার তাতে আপত্তি জানিয়ে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নেওয়ার দাবি জানান। পুলিশ তাতে রাজি না হওয়ায় রাতে থানাতেই থাকতে হয় প্রথম আলোর এই জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদককে। মঙ্গলবার সকালে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।