যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের কৌশলগত জোট ‘কোয়াড’-এ বাংলাদেশের অংশগ্রহণ নিয়ে চীন আগ বাড়িয়ে কথা বলেছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মতিন
চীনের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার মঙ্গলবার (১১ মে) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, কোয়াড নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। এ ছাড়া বাংলাদেশ স্বাধীন, সার্বভৌম দেশ হিসেবে সিদ্ধান্ত নেবে। দেশের স্বার্থ চিন্তা করেই বাংলাদেশ কোয়াডে যোগ দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
ড. মোমেন বলেন, চীনা রাষ্ট্রদূত কোয়াডে যোগ দেওয়ার বিষয়ে আগ বাড়িয়ে বলেছেন। এটা খুবই দুঃখজনক। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ, এখানে কারও হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, আমাদের পররাষ্ট্রনীতি আমরাই ঠিক করব, চীনা রাষ্ট্রদূত কী বললেন সেটাকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি না।
এর আগে চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং গতকাল সোমবার বলেন, কোয়াডে বাংলাদেশে যুক্ত হওয়া ঠিক হবে না। সাংবাদিকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল মতবিনিময়ের সময় এ মন্তব্য করেছিলেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জাপান, ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার কৌশলগত জোট কোয়াডকে চীনবিরোধী একটি ছোট গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে বেইজিং। তাই চীন মনে করে, এতে যেকোনোভাবে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ ঢাকা-বেইজিং সম্পর্ককে ‘যথেষ্ট খারাপ’ করবে।
গত মাসের শেষ সপ্তাহে চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল ওয়েই ফেঙ্গহি ঢাকা সফর করেন। এ সময় কোয়াড, আইপিএস বিষয়গুলো নিয়ে বাংলাদেশের সহযোগিতা চেয়েছিল চীন।
চীনের অনুরোধের জবাবে বাংলাদেশ কী বলেছে, জানতে চাইলে চীনের রাষ্ট্রদূত প্রশ্নটির উত্তর এড়িয়ে গেছেন।
লি জিমিং বলেন, চীন সব সময় মনে করে, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে কোয়াড হচ্ছে চীনবিরোধী একটি ছোট গ্রুপ। আমি খুব স্পষ্ট করেই বলতে চাই, অর্থনৈতিক প্রস্তাবের কথা বললেও এতে নিরাপত্তার উপাদান আছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুর মিলিয়ে জাপানও এখানে চীনের বিরুদ্ধে বলছে।
কোয়াডে অংশগ্রহণের বিষয়ে বাংলাদেশকে সতর্ক করে চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, এই প্রেক্ষাপটে বলব, এ ধরনের ছোট গোষ্ঠী বা ক্লাবে যুক্ত হওয়ার ভাবনাটা ভালো না। বাংলাদেশ এতে যুক্ত হলে তা আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক যথেষ্ট ‘খারাপ’ করবে।
এর আগে গত মাসের শেষ সপ্তাহে চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল ওয়েই ফেঙ্গহি ঢাকা সফর করেন। সেই সময় কোয়াড, আইপিএস নিয়ে বাংলাদেশের সহযোগিতা চেয়েছিল চীন।
ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরে নৌ চলাচল ‘অবাধ ও স্বাধীন‘ রাখার উপায় খোঁজার যুক্তি দেখিয়ে ২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের মধ্যে ‘কোয়াড’ (কোয়াড্রল্যাটারাল সিকিওরিটি ডায়ালগ) নামে এই কৌশলগত জোটের সংলাপের সূচনা হয়। মূলত চীনকে ঠেকাতেই এই উদ্যোগ।