এএমআরের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ৫ দফা ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ প্রধানমন্ত্রীর

1570
শেয়ার করতে ক্লিক করুন

অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) সঠিকভাবে মোকাবিলা করা না গেলে ভবিষ্যতে আরও মারাত্মক মহামারি দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সমস্যার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য পাঁচ দফা ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ উপস্থাপন করেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এএমআর বিষয়ক একটি উচ্চপর্যায়ের ইন্টার‌্যাকটিভ সংলাপে দেওয়া বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৫তম অধিবেশনের ফলোআপ হিসেবে ‘সার্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজ সম্পর্কিত উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকের রাজনৈতিক ঘোষণা’ শিরোনামে প্রেসিডেন্ট ভোলকান বোজকির সংলাপটির আহ্বান করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব এখন ভয়াবহ কোভিড-১৯ মহামারির মোকবিলা করছে। এএমআর ভবিষ্যতে আরও মারাত্মক মহামারি হয়ে দেখা দিতে পারে। এই বিপদ সময়মতো মোকাবিলায় ব্যর্থতার ফলে মানবজীবন, প্রাণী ও উদ্ভিদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমান অনুযায়ী, এএমআরের প্রভাবে ২০৫০ সাল নাগাদ প্রতিবছর এক কোটি মানুষ মারা যাবেন। এএমআরের আর্থিক ক্ষতি কোটি কোটি ডলারের হবে, যা খাদ্য সুরক্ষা ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) এবং সার্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজ অর্জনের অগ্রগতিকে ব্যাহত করবে।

এএমআর-এ গ্লোবাল লিডার্স গ্রুপের সহসভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি এএমআর-এর বিরুদ্ধে লড়াই এবং একে কার্যকরভাবে মোকাবিলার জন্য এবং বিপদে কার্যকরভাবে লড়াই করতে সংলাপে পাঁচ দফা কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন।

শেখ হাসিনা তার প্রথম প্রস্তাবনায় স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে বিশেষ মনোযোগ দিয়ে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক উভয় স্তরে এএমআর বিষয়ে সমন্বিত বহু-বিভাগীয় এবং সম্মিলিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানান। দ্বিতীয় প্রস্তাবে এএমআর মোকাবিলা করার জন্য ভালো উৎপাদন, পরীক্ষাগার অনুশীলন ও নজরদারি কাঠামোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী তার তৃতীয় প্রস্তাবনায় প্রযুক্তি হস্তান্তর ও মালিকানা ভাগ করে নেওয়ার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় হিসেবে সাশ্রয়ী মূল্যের এবং কার্যকর অ্যান্টিবায়োটিকগুলোতে উপযুক্ত প্রবেশাধিকার নিশ্চিতের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। চতুর্থ ও পঞ্চম প্রস্তাবনায় তিনি সদস্য দেশগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক অঙ্গীকার এবং অংশীদারিত্বের মাধ্যমে এএমআর প্রতিরোধ কার্যক্রমের জন্য টেকসই অর্থায়ন এবং এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য বিশ্ব জনগণের সচেতনতার পক্ষে মত দেন।

এএমআর-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশ সরকারের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্স কনটেইনমেন্ট (এআরসি) সম্পর্কিত ছয় বছরের (২০১৭ থেকে ২০২২) জাতীয় কৌশলগত পরিকল্পনা এবং জাতীয় কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছে সরকার। এছাড়াও এআরসি সম্পর্কিত জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটি ও বাংলাদেশ এএমআর রেসপন্স জোট গঠন করা হয়েছে। ডব্লিউএইচও’র শ্রেণিবিন্যাস নিশ্চিত করতে মানব ও প্রাণী উভয়েরই স্বাস্থ্যের জন্য পরীক্ষাগারভিত্তিক এএমআর নজরদারি নিয়মিত পরিচালিত হচ্ছে। একইভাবে, ২০১৯ সাল থেকে আমরা ডব্লিউএইচও গ্লাস প্ল্যাটফর্মকে এএমআর নজরদারি ডেটা সরবরাহ করে আসছি।

এএমআরের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাকে ভবিষ্যতের মহামারি প্রতিরোধের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এ লক্ষ্যে আমাদের এএমআর বিষয়ক ২০১৫ গ্লোবাল অ্যাকশন প্ল্যান, এএমআর বিষয়ক জাতিসংঘ রাজনৈতিক ঘোষণা ২০১৬ এবং এএমআর জাতীয় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। এএমআর’র বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অবদান রাখতে সংশ্লিষ্ট সব স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কাজ করতে আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত। বাসস।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন