এক দিনে বিশ্বের রেকর্ড করোনা শনাক্ত ভারতে

1435
শেয়ার করতে ক্লিক করুন

ভারতে করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ বিধ্বংসী রূপ নিয়েছে। দেশটিতে দৈনিক করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে গেছে। আজ বৃহস্পতিবার এনডিটিভি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ লাখ ১৪ হাজার ৮৩৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। ভারতে এক দিনে এত করোনা রোগী আগে কখনো শনাক্ত হয়নি। ভারতে আগের ২৪ ঘণ্টায় ২ লাখ ৯৫ হাজার ৪১ করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছিল।

ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় যতসংখ্যক করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে, তা একটি বিশ্ব রেকর্ডও। বিশ্বের কোনো দেশে এখন পর্যন্ত এক দিনে এত রোগী আগে কখনো শনাক্ত হয়নি।

বিশ্বের কোনো দেশে এক দিনে সর্বোচ্চসংখ্যক করোনা রোগী শনাক্তের রেকর্ডটি এত দিন ছিল যুক্তরাষ্ট্রের দখলে। দেশটিতে গত জানুয়ারিতে এক দিনে সর্বোচ্চ ২ লাখ ৯৭ হাজার ৪৩০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনায় মৃত্যুর ক্ষেত্রেও রেকর্ড হয়েছে। দেশটিতে এক দিনে রেকর্ডসংখ্যক ২ হাজার ১০৪ জন করোনায় মারা গেছেন। আগের দিন রেকর্ডসংখ্যক ২ হাজার ২৩ জন করোনায় মারা যান। এর আগে ভারতে গত বছরের ১৬ জুন এক দিনে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

ভারত সরকারের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৫৯ লাখ ৩০ হাজার ৯৬৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত ভারতে করোনায় মারা গেছেন ১ লাখ ৮৪ হাজার ৬৫৭ জন।

বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পরেই রয়েছে ভারত। ভারতের পর রয়েছে ব্রাজিল। সংক্রমণের দিক দিয়ে সম্প্রতি ব্রাজিলকে টপকে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসে ভারত।

১৫ এপ্রিল থেকে ভারতে প্রতিদিন দুই লাখের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়ে আসছিল। কিন্তু গত ২৪ ঘণ্টায় প্রথমবারের মতো এক দিনে নতুন করোনা রোগী শনাক্তের ক্ষেত্রে তিন লাখের ‘মাইলফলক’ অতিক্রম করল ভারত।

গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে সবচেয়ে বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে মহারাষ্ট্র, উত্তর প্রদেশ, দিল্লি, কর্ণাটক ও কেরালায়। মহারাষ্ট্রে শনাক্ত হয়েছে ৬৭ হাজার ৪৬৮ জন। উত্তর প্রদেশে শনাক্ত হয়েছে ৩৩ হাজার ১০৬ জন। দিল্লিতে ২৪ হাজার ৬৩৮ জন। কর্ণাটকে ২৩ হাজার ৫৫৮ জন। আর কেরালায় ২২ হাজার ৪১৪ জন।

করোনা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতির মুখে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে রাত্রিকালীন কারফিউসহ বিভিন্ন কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। পাশাপাশি টিকাদান কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।

ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ গত ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুর দিকে আরম্ভ হয় বলে জানায় বিবিসি। ভারতের বর্তমান গুরুতর করোনা পরিস্থিতির জন্য বড় ধরনের ধর্মীয় জমায়েত, কড়াকড়ি শিথিল, অধিকাংশ জনসমাগমস্থল চালু, নির্বাচনী সভা-সমাবেশ প্রভৃতির মতো বিষয়গুলোকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।

দেশটির বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এখন পিক বা চূড়ায় উপনীত হয়নি। ফলে দেশটিতে করোনার সংক্রমণ আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে। করোনার এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা কবে নাগাদ নিম্নমুখী হতে পারে, সে সম্পর্কে দেশটির বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না।

করোনার সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করা ভারত তার সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্যগত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। অক্সিজেন, ওষুধ, হাসপাতালে শয্যার সংকটসহ নানা সমস্যায় দেশটির স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন