টানা তৃতীয় দিনের মতো দেশে করোনায় শতাধিক মানুষের মৃত্যুর খবর দিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আজ রোববার অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১০২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এটি দেশে এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যুর রেকর্ড। এর আগের দুদিন ১০১ জন করে মৃত্যু বরণ করেছিল।
শনিবার সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ৬৯৮জন। এ নিয়ে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৭ লাখ ১৮ হাজার ৯৫০ । এর মধ্যে ১০ হাজার ৩৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। সুস্থ হয়েছে ৬ লাখ ১৪ হাজার ৯৩৬ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৯ হাজার ৪০৪ জনের। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় রোগী শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ০৬ শতাংশ।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা শনাক্তের কথা জানায় সরকার। গত বছরের মে মাসের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত শনাক্তের হার ২০ শতাংশের ওপরে ছিল। এরপর থেকে শনাক্তের হার কমতে শুরু করে।
গত জুন থেকে আগস্ট—এই তিন মাস করোনার সংক্রমণ ছিল তীব্র। মাঝে নভেম্বর-ডিসেম্বরে কিছুটা বাড়লেও বাকি সময় সংক্রমণ নিম্নমুখী ছিল। এ বছর মার্চে শুরু হয়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। প্রথম ঢেউয়ের চেয়ে এবার সংক্রমণ বেশি তীব্র। মধ্যে কয়েক মাস ধরে শনাক্তের চেয়ে সুস্থ বেশি হওয়ায় দেশে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা কমে আসছিল। কিন্তু মার্চ থেকে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যাও আবার বাড়তে শুরু করেছে।
কোনো দেশে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আছে কি না, তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ঠিক করা কিছু নির্দেশক থেকে বোঝা যায়। তার একটি হলো রোগী শনাক্তের হার। টানা দুই সপ্তাহের বেশি রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়। এ বছর ফেব্রুয়ারির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শনাক্তের হার ৩ শতাংশের নিচে ছিল। দুই মাস পর গত ১০ মার্চ দৈনিক শনাক্ত আবার হাজার ছাড়ায়। এরপর দৈনিক শনাক্ত বাড়ছেই।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত ২৯ মার্চ বেশ কিছু বিধিনিষেধসহ ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করেছে সরকার। এর মধ্যে ঘরের বাইরে গেলে মাস্কের ব্যবহার অন্যতম। কিন্তু সংক্রমণ আশঙ্কাজনকভাবে বাড়তে থাকলেও জনগণের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে এখনো উদাসীনতা দেখা যাচ্ছে। জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে হলে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানার বিকল্প নেই।