অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার পর এবার জনসন অ্যান্ড জনসনের এক ডোজের করোনা টিকাতেও রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনা ঘটেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইউরোপিয়ান মেডিসিনস এজেন্সি (ইএমএ) সম্প্রতি এই তথ্য জানিয়েছে।
শুক্রবার (৯ এপ্রিল) এক বার্তায় ইএমএ বলেছে, জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা নেওয়ার পর এ পর্যন্ত চারজন রক্ত জমাট বাঁধা সমস্যায় ভুগছেন। ভুক্তভোগীদের একজন ইউরোপের, বাকি তিন জন যুক্তরাষ্ট্রের। আক্রান্ত তিন জনের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ইউরোপে যখন জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছিল, তখন একজন রক্ত জমাট বাঁধা সমস্যায় পড়েছিলেন। সে সসময় কোম্পানির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, এই সমস্যার সঙ্গে টিকার কোনো সম্পর্ক নেই। তবে যুক্তরাষ্ট্রে সম্প্রতি তিন জন টিকা গ্রহীতার একই সমস্যা হওয়ায় নড়েচড়ে বসেছে ইইউ। টিকা বিষয়ক যাবতীয় তথ্য পুনঃমূল্যায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ইএমএকে।
যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত ৫০ লাখ মানুষ জনসন অ্যান্ড জনসনের একডোজের করোনা টিকা নিয়েছেন।
ব্লুমবার্গের ইন্টেলিজেন্স শাখার বিশ্লেষক স্যাম ফাজেলি জানিয়েছেন , জনসন অ্যান্ড জনসন (জে অ্যান্ড জে), অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও রাশিয়ার করোনা টিকা স্পুটনিক ৫— টিকা প্রস্তুতের ক্ষেত্রে অ্যাডেনোভাইরাস প্রযুক্তি অনুসরণ করেছে। এই প্রযুক্তি অনুসরণের কারণেই টিকা গ্রহণের বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে রক্ত জমাট বাঁধা সমস্যা দেখা দিচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
ইএমএর ওষুধ ও টিকা বিশ্লেষন বিভাগের প্রধান পিটার আরলেট যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গকে বলেন, ‘আমরা জে অ্যান্ড জেসহ অন্যান্য টিকাগুলোর তথ্য পর্যবেক্ষণ ও পুনঃমূল্যায়ন করছি। এটি শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত এ ব্যাপারে কিছু বলা উচিত হবে না।’
যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সংস্থাটির কোনো কর্মকর্তা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ইএমএ সূত্রে জানা গেছে, জরুরী প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য ইউরোপে জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকার অনুমোদন দেওয়া হলেও চলতি মাসের শেষ থেকে এই টিকা ব্যবহার করা হবে। পাশাপাশি ইউরোপের বাজারে রাশিয়ার করোনা টিকা প্রবেশের বিষয়টিও ইইউ কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় রয়েছে। টিকা বিষয়ক তথ্যাদি যথাযথ পর্যালোচনার পর এই অনুমোদন দেওয়া হবে।