শিগগরিই বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে যাচ্ছে কয়লাভিত্তিক পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। এরইমধ্যে দুটি ইউনিটই উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত হয়েছে। আগামী ৩১ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন।
তার আগে মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. হাবিবুর রহমান।
পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার নিশানবাড়িয়ায় ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণে ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরের সময় বাংলাদেশের নর্থওয়েস্ট পাওয়ার কোম্পানি ও চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) মধ্যে যৌথ উদ্যোগের চুক্তির হয়। এরপর বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড গঠিত হয়। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালীতে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন।
এছাড়া কয়লাভিত্তিক এ তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রয়োজনীয় কয়লা ইন্দোনেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়া থেকে সরাসরি বন্দরের নিজস্ব টার্মিনালে পৌঁছায়। কয়লা ব্যবহারের পরিবেশ বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। শ্রমিকদের জন্য রয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, পায়রা তাপ বিদ্যুতকেন্দ্রের দুটি ইউনিট থেকেই ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে গত ৮ ডিসেম্বর। এখান থেকে উৎপাদিত ৬২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাণিজ্যিকভাবে দক্ষিণাঞ্চলের জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। এর আগে গোপালগঞ্জ থেকে পায়রা বন্দর পর্যন্ত ১৬০ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করে তা চালু করা হয়। গোপালগঞ্জের গ্রিড থেকে রাজধানীর আমিনবাজার পর্যন্ত সঞ্চালন লাইনের নির্মাণ কাজ চলছে। যা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
বিদ্যুৎ সচিব মো. হাবিবুর রহমান বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকৌশলী এ এম খোরশেদুল আলম, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেইন ও পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরীকে সঙ্গে নিয়ে মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) পায়রা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তিনি পায়রা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের টার্বাইন প্যানেল, বয়লার ব্যবস্থাপনা, জিআইএস বণ্টন ব্যবস্থা, পাওয়ার ইভ্যাকুয়েশন, নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা, পূণর্বাসন কেন্দ্র- স্বপ্নের ঠিকানা ও বাংলাদেশ–চায়না টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট সরেজমিনে পরিদর্শন করেন।
এ প্রসঙ্গে বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকৌশলী এ এম খোরশেদুল আলম জানান, ‘পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনের জন্য এখন পুরোপুরি প্রস্তুত। এখন উদ্বোধনের প্রস্তুতিও শেষ করেছেন।’
বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে ঠিকাদার নিয়োগের চুক্তি স্বাক্ষরের পর ১২ হাজার ২৮৪ কোটি টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পের প্রায় ৮০ শতাংশ ঋণ সহায়তা দিয়েছে চীনের এক্সিম ব্যাংক ও চায়না ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক।