নিজস্ব প্রতিবেদক:
তিস্তা চুক্তি না হওয়ার বিষয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কোনো ব্যর্থতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। মঙ্গলবার দুপুরে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। এছাড়া অনলাইন পোর্টাল ও আইপিটিভি তদারকির জন্য আলাদা একটি উইং করা হচ্ছে বলেও জানান তথ্যমন্ত্রী।
তিস্তা চুক্তি নিয়ে সরকার ধুম্রজালের ভেতরে রেখেছে – বিএনপির পক্ষ থেকে এমন অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া জানতে চান একজন সাংবাদিক। জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে তো অনেক দূরে এগিয়েছি আমরা। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে এ ব্যাপারে অনেক দূর এগোনো হয়েছে। কিন্তু ভারতের সংবিধান অনুযায়ী রাজ্য সরকারের অনুমতি লাগে। তাই এখানে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কোনো ব্যর্থতা নেই। তাদের যে একাগ্রতা, সেটি আছে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের অনুমোদন পেলে সেটি হবে। এটি তারাও বোঝে। বুঝেও না বোঝার ভান করে। এটি অপ্রাসঙ্গিক হলেও প্রসঙ্গ বানানোর চেষ্টা করছে। আসলে বিএনপি কোনো ইস্যু খুঁজে পাচ্ছে না বলে খড়কুটো ধরে চেষ্টা করছে, এছাড়া অন্য কিছুই নয়।
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, যারা ব্যর্থ ছিল তারা সবসময় সবকিছুর মধ্যেই ব্যর্থতা দেখে। কারণ, তারা যখন দেশ পরিচালনা করেছে, তখন চরমভাবে ব্যর্থ ছিল। তবে কিছু ব্যাপারে তারা সফল ছিল। সেটি হচ্ছে দেশকে পরপর দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বানানো এবং দেশকে জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্য বানানোর ক্ষেত্রে সফল ছিল। বাকি সব বিষয়ে তারা ব্যর্থ ছিল। এজন্য তারা সবকিছুতে ব্যর্থতা দেখার চেষ্টা করে। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, বিএনপির অভিনন্দন দেওয়া প্রয়োজন ছিল সরকারকে, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীকে। প্রধানমন্ত্রী মানবিক দিক বিবেচনা করে বেগম খালেদা জিয়ার শাস্তি ছয় মাসের জন্য স্থগিত রেখেছেন, কিন্তু বিএনপি ধন্যবাদ দিতে ব্যর্থ হয়েছে। আসলে বিএনপি ধন্যবাদ দেওয়ার সংস্কৃতি লালন করে না। কাউকেই ধন্যবাদ দিতে পারে না।
সীমান্ত হত্যা নিয়ে বিএনপি বিভিন্ন সময় প্রশ্ন তোলে। যেহেতু ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে আসছেন, এই বিষয়টি আপনাদের আলোচনায় থাকবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সীমান্ত হত্যা নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। ইতোমধ্যে সীমান্ত হত্যা অনেক কমেও গেছে। আগে যে সীমান্ত হত্যা হতো, সেটি এখন অনেক কমে গেছে। তবে আমরা চাই সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় আসুক। এটি নিয়ে সবসময় দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে আলোচনা হচ্ছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যায়েও আলোচনা হচ্ছে।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমরা ইউটিউব এবং ফেসবুককে ক্রমাগতভাবে বলে যাচ্ছি ট্যাক্স দেওয়ার জন্য। তারা প্রথমদিকে তো সব কিছুই প্রত্যাখ্যান করেছিল। এখন তারা একমত ট্যাক্স দিতে হবে।
অনলাইন ও আইপিটিভি তদারকিতে উইং: অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও আইপিটিভি তদারকির জন্য আলাদা একটি উইং করা হচ্ছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তথ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অনলাইনে আরও নিবিড়ভাবে সেবা দিতে যেন কাজ করতে পারি, সে লক্ষ্যে একটি আলাদা উইং করা হচ্ছে। আগে আলাদা কোনো সেল ছিল না। এখন আমাদের মিডিয়া উইং সেটা দেখে। এজন্য সেখানে আলাদা আরও একটি উইং করার পরিকল্পনা নিয়েছি। সেটির নির্দিষ্ট কাজ হবে, অনলাইনে যে সমস্ত সম্প্রচার হয়, আইপিটিভিসহ অন্যান্য যা সম্প্রচার হয়; সেগুলো তদারকি করা। তিনি বলেন, আপাতত আমাদের যে জনবল আছে সে জনবল দিয়েই উইংটি শুরু করবো। পরবর্তীতে আমরা জনপ্রশাসনে জানাবো, এখানে আরও জনবল সংযোজন করার জন্য।