নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, জনগণের কাছে শিরোপা পাবে কি না, বাহবা পাবে কি না, সে কথা ভেবে বিএনপিকে আগামীর পথ চলতে হবে। আওয়ামী লীগ মাঝে মধ্যে আমাদের সংবেদনশীল জায়গায় স্পর্শ করবে, আঘাত করবে। সেটা নিয়ে যদি ব্যস্ত হই, তাহলে তারা আরামে দিন কাটাবে। গত ১২-১৩ বছর আমরা এমনই দেখেছি। বিএনপি রাজপথে নামি আর না নামি, আওয়ামী লীগ সরকার আর থাকবে না।
শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘গণতন্ত্র, গণমাধ্যম, গণকণ্ঠ অবরুদ্ধ বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কোন পথে?’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। সভার আয়োজন করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সংগ্রাম পরিষদ।
গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, দেশ স্বাধীন কোনো ভাষণে হয়নি। দেশ স্বাধীন হয়েছে যুদ্ধে। সেই যুদ্ধের ডাক দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমানকে খেতাব কে দিল কি দিল না, জিয়াউর রহমানকে কী বললো কী বললো না তাতে কিছু যায় আসে না। জিয়াউর রহমান জিয়াউর রহমানের জায়গায় আছেন, থাকবেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের যে চরিত্র, আওয়ামী লীগ যা চায়, তাতে আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগের জন্য। আর মানুষ মানুষের জন্য। আওয়ামী লীগ মানুষের জন্য না। কারণ আওয়ামী লীগকে মানুষের কাতারে ফেলা যায় না। সেই ক্ষেত্রে ওরা সফল। ওরা ওদের কাজে ব্যর্থ না। ওরা পত্রিকা বন্ধ করা, পায়ের রগ কাটা, সাংবাদিক পেটানো, চুরিচামারি, মানুষের সম্পত্তি দখল, শিশু-নারী নির্যাতন, ব্যাংক ডাকাতি ও ছিনতাই করছে। এটা ওদের অর্ধশত বছরের ঐতিহ্য।
তিনি বলেন, ১৯৬২ থেকে ১৯৭০ পর্যন্ত আমি কোনো সংগঠনের সদস্য ছিলাম বলে মনে পড়ে না। যখন দলের কর্মী বেড়ে যায়, তখন যারা পদ বঞ্চিত হয়, বুঝতে হবে তাদের মাঠে কোনো ত্যাগ নেই। তাদের দিয়ে আন্দোলন হয় না। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমরা স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার উদ্যোগ নিয়েছি। সেখানে সেই কুকর্ম উঠে আসবে।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, আওয়ামী লীগ অকৃতজ্ঞের দল। আজ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতাদের নাম মুখে নেওয়া হয় না। আজ ইতিহাস এমন ভাবে বিকৃত করা হয়েছে, সবকিছু একজনই করেছেন। আওয়ামী যে কর্মকাণ্ড করছে, তাদের কাছ থেকে এর চেয়ে বেশি কী আশা করবেন।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে প্রথম পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে গুলি ছুড়েন জিয়াউর রহমান। আজ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে জিয়াউর রহমানের বীর উত্তম খেতাব কেড়ে নেওয়ার অপচেষ্টা করছে। আওয়ামী লীগের সেই সুবর্ণজয়ন্তী প্রোগ্রাম লাঠি নিয়ে রুখে দিতে হবে। ২০২১ সাল হবে আওয়ামী লীগের পতনের বছর।
সভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ভাষা আন্দোলনে আওয়ামী লীগের কোনো ভূমিকা নেই। ভাষা সৈনিক মতিন, অধ্যাপক গোলাম আযম, তজমুদ্দীন মজলিস এরাই ভাষা আন্দোলনের সুতিকাগার। এখন আওয়ামী লীগ বলে ভাষা আন্দোলনেও নাকি শেখ মুজিবের ভূমিকা ছিল। এটা হাস্যকর।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার কৃতজ্ঞতা থাকা উচিত। উনার বাবা বাকশাল করে এ পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। জিয়াউর রহমান এসে আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছেন। যদি না দিতেন, তাহলে আজ আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব থাকতো না। এ সরকার বৈধ-অবৈধ কিছু নেই, এটা একটা রাজত্ব। এ হায়নার রাজত্ব ভাঙতে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বিপ্লব করতে হবে। যেটা বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা করেছেন। বিএনপির দিকে তাকিয়ে থাকলে হবে না। যে যার অবস্থান থেকে বিপ্লব করতে হবে।
সভায় আরো বক্তব্য দেন, আয়োজক সংগঠনের সভাপতি সাহেদুল ইসলাম লরন, ওলামা দলের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা রফিকুল ইসলাম, জাসাসের কেন্দ্রীয় নেতা আরিফুর রহমান মোল্লা প্রমুখ।