চট্রগ্রামে ধাতু প্রদর্শনীসহ সংঘদান ও জ্ঞাতিভোজের আয়োজন: মূল পর্বের অনুষ্ঠান ১০ মার্চ

1965
শেয়ার করতে ক্লিক করুন

চট্রগ্রাম প্রতিনিধি: চট্রগ্রামের আবুরখীল হতে পালবার লিংক সেন্টার ধাতু প্রদর্শনীসহ সংঘদান ও জ্ঞাতিভোজনের আয়োজন করেছে। আগামী ১০ই মার্চ, বুধবার পালবার লিংক সেন্টার, আমেরিকার পক্ষে ডাক্তারবাড়ি, মিরাপাড়া, বাংলাদেশকে বুদ্ধের ধাতু হস্তান্তর করা হবে। এই মহতী অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বিহার উৎসর্গ, বুদ্ধের জীবনদান, ধাতু প্রদর্শনী, অস্টপরিস্কারসহ সংঘদান ও জ্ঞাতিভোজনের আয়োজন করা হয়েছে।

আয়োজনে সারাদেশের বৌদ্ধ প্রতিনিধি ও আন্তর্জাতিক নিযুক্ত প্রতিনিধিরা এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন। এতে বিহার উৎসর্গ, বুদ্ধের জীবনদান, ধাতু প্রদর্শনী, অস্টপরিস্কারসহ সংঘদানে যথাযোগ্য সম্মান, ভক্তি ও জাঁকজমকপূর্ণ পরিবেশের মাধ্যমে পালন করা হবে। ফলে জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে আনন্দের সঙ্গে বিহারে গিয়ে আয়োজনটি উপভোগ করেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মহাকারুণিক বুদ্ধ ৪৫ বছর ধর্মপ্রচার করেছিলেন। তাঁর জীবন-দর্শনে ছিল অহিংসা, ক্ষমা, দয়া, সাম্য, মৈত্রী, প্রীতি, সহনশীলতা, সহমর্মিতা, পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সৌভ্রাতৃত্ববোধ। এসব আদর্শকে ধারণ করতে তাঁর শিষ্য-প্রশিষ্যদের নির্দেশ প্রদান করেন। ধর্মপদের যমকবর্গে উল্লেখ আছে, “ন হি বেরেন বেরানি সম্মন্তীব কুদাচনং, অবেরন চ সম্মতি এস ধম্মো সনন্তনো”

অর্থাৎ, জগতে শত্রুতার দ্বারা কখনো শত্রুতার উপশম হয় না, মিত্রতার দ্বারাই শত্রুতার উপশম হয়। বুদ্ধের অমিয় বাণী থেকে স্পষ্ট ধারণা পাই, মানবজীবন থেকে যদি লোভ, হিংসা, ঘৃণা, বিদ্বেষ, ক্রোধ, পাপ, মোহ, মিথ্যা যাবতীয় কলুষিত বিষয়গুলো দূর করা যায়, তাহলে প্রকৃত সুখ লাভ করা সম্ভব হবে এবং সুন্দর ও শান্তিময় পৃথিবী প্রতিষ্ঠিত হবে। বৌদ্ধ নীতিশাস্ত্রের মূলভিত্তি হলো পঞ্চশীল। বুদ্ধগৃহীদের জন্য শীল পালনে গুরুত্বারোপ করেন। পঞ্চশীলে বলা হয়েছে, প্রাণী হত্যা থেকে বিরত, চৌর্যবৃত্তি না করা, মিথ্যা কথা থেকে বিরত, অবৈধ কামাচার হতে বিরত থাকা এবং কোনো ধরনের নেশাদ্রব্য সেবন না করা। যেকোনো ধর্মের মানুষের নৈতিক উন্নতি সাধনের জন্য এ কাজগুলো থেকে বিরত থাকতে হয়। বর্তমান সময়ে যেন সবকিছু উল্টো পথে চলছে, যা কিছুতে নিষেধ দেখা যাচ্ছে, সে কাজ উৎসাহের সঙ্গে হারহামেশে করে চলছে। মিথ্যা, পরনিন্দা, পরচর্চা, ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত, অন্যকে হেয় করা ও গিবত করে অনেকে নিজেকে পুতপবিত্র ভেবে অন্যের কাছে ভালো রাখার প্রতিযোগিতায় মেতে উঠছে। অন্যকে অপমান ও লাঞ্ছনা করতে বিন্দুমাত্র বিবেকে বাধা আসে না। এ রকম অবস্থায় এসে পৌঁছেছি আমরা যে ভালো কাজের জন্য সাধুবাদ দেওয়ার লোকের সংখ্যা সমাজে কমে যাচ্ছে। মারামারি, হানাহানি, কাটাকাটি ও তর্ক করে জেতার আপ্রাণ চেষ্টা। মুখে বলি একটা, কাজ করি আরেকটা। এসব অপকর্ম পরিণাম যে ভয়াবহ, তা অনেকে জানে আবার অনেকে জানে না। চলুন এ দুষ্টচক্র থেকে বের হয়ে আসি। ভগবান বুদ্ধের অসাধারণ বাণী থেকে শিক্ষা নিয়ে সব ধরনের অশালীন কর্ম থেকে দূরে থাকি, সব প্রাণীর প্রতি মহত্ত্ববোধ সৃষ্টি করি, পরিবেশের প্রতি যত্নশীল হই, তাহলে ব্যক্তি থেকে বিশ্বে শান্তি বর্ষিত হবে।

উল্লেখ্য যে, পালবার লিংক সেন্টার, আমেরিকার আবেদনের প্রেক্ষিতে কানাডাস্হ লোটাস ব্লুমিং বুড্ডিস্ট চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশন গৌতম বুদ্ধের দন্তধাতু, অর্হৎ সারিপুএ ভান্তের ধাতু, অর্হৎ মহামোদ¹লায়ন ভান্তের ধাতু, অর্হৎ উপালি ভান্তের ধাতু, অর্হৎ বুদ্ধপুএ রাহুল ভান্তের ধাতু পালবার লিংক সেন্টার বাংলাদেশকে দান করেছেন।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন