স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকাকে ভেনিস বা সান্তোসার মত করে গড়ে তোলার যে স্বপ্ন দেখেছেন সে অনুযায়ী নগরীকে বিনির্মাণ করা হবে। তিনি আজ সিরডেপ মিলনায়তনে ‘ঢাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা ও খাল আধুনিকায়ন’ বিষয়ক নগর সংলাপে অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য ভেনিস, সিঙ্গাপুর অথবা সান্তোসা বেড়াতে যাই। এমন একটি শহর গড়ার স্বপ্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেখেছেন। প্রধানমন্ত্রীর এই স্বপ্ন পূরণের জন্য আমি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের দুই মেয়রকে নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি’।
তিনি বলেন, ঢাকাকে বাসযোগ্য আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন শহরে রুপান্তরিত করতে হাতিরঝিল থেকে বনানী পর্যন্ত এবং ইউনাইটেড হাসপাতাল পর্যন্ত ওয়াটা ট্রান্সপোর্ট চালু করার জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এবং এই উদ্যোগ বাস্তবে রুপ দিতে প্রকল্প নেয়া হচ্ছে। এই উদ্যোগের সাথে নগর পরিকল্পনাবিদ, স্থপতিসহ সকল বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরে যতগুলো খাল আছে তাতে একটি হাতিরঝিল নয় এরকম অনেক হাতিরঝিল নির্মাণ করা সম্ভব। এ ব্যাপারে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন মন্ত্রী।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ও ড্যাপের আহবায়ক বলেন, ডেমোগ্রাফিক সাইজ অর্থাৎ শহরে কত মানুষ বসবাস করবে সে অনুযায়ী পরিকল্পনা নিতে হবে। এপ্রসঙ্গে তিনি জানান, পূর্বাচল ১০ লক্ষ মানুষের বসবাসের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে যদি ৫০ লাখ মানুষ বসবাস করে তাহলে তা আর বাসযোগ্য থাকবে না । খালের দায়িত্ব পাওয়ার পর দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ইতোমধ্যে উচ্ছেদ কাজ আরম্ভ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে, খাল দখল করে তার উপরে বিল্ডিং বানানো হয়েছে। যারা এসব করেছে তারা যত ক্ষমতাশালী হোক না কেন আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। সবাইকে সাথে নিয়ে ঢাকা শহরের খালসমূহ উদ্ধার করা হবে বলেও উল্লেখ করেন মো. তাজুল ইসলাম।
মন্ত্রী বলেন, ঢাকা নগরীর অন্যতম সমস্যা বর্জ্য। এটি সমাধান করার জন্য মন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কাজ আরম্ভ করা হয়েছে। বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতার আলোকে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটিকে অনুমোদন দিয়েছেন। বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজ শুরু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এটি চালু হলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন আসবে। এসময় বর্জ্য কালেকশনে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ প্লানার্স (বিআইপি) এর সভাপতি ড. আকতার মাহমুদ, ইনস্টিটিউট অফ ওয়াটার এন্ড ইনভায়রনমেন্টের চেয়ারম্যান এম এনামুল হক, স্থপতি ইকবাল হাবিব, পরিকল্পনাবিদ ড. আদিল মোহাম্মদ খান এবং ড্যাপের প্রকল্প পরিচালক আশরাফুল ইসলাম অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন।