জিয়া মুক্তিযোদ্ধার ছদ্মবেশে পাকিস্তানের সহযোগী ছিলেন: তথ্যমন্ত্রী

1294
শেয়ার করতে ক্লিক করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধার ছদ্মবেশে পাকিস্তানের সহযোগী ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ব বেতার দিবস উপলক্ষে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ বেতার সদর দফতরে আয়োজিত র‍্যালি ও আলোচনা সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
জিয়াউর রহমানের খেতাব প্রত্যাহার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় জিয়াউর রহমান পাকিস্তানের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন। তার কাছে তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অফিসার পাকিস্তানের পক্ষে তার ভূমিকার জন্য প্রশংসা করে চিঠি লিখেছিল।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়া স্বাধীনতার বিরোধিতাকারীদের পুনর্বাসন করেছেন। যে শাহ আজিজুর রহমান পাকিস্তানের ডেপুটি লিডার হিসেবে জাতিসংঘে পাকিস্তানের পক্ষে ওকালতি করেছেন, তিনি তাকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছেন। (জিয়া) যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছেন। সুতরাং ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধার ছদ্মাবরণে প্রকৃতপক্ষে পাকিস্তানের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছিলেন।’

যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, এদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে বেতারের ভূমিকা ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যারা স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অনুষ্ঠান শুনেছেন তারা জানেন মুক্তিকামী এদেশের মানুষের মাঝে কী উদ্যম-উদ্দীপনা জাগাতো সে সময়ের অনুষ্ঠান। মানুষ কী উন্মুখ হয়ে থাকতো তা শোনার জন্য।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর দেয়া স্বাধীনতার ঘোষণা ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে প্রথম এম এ হান্নান পাঠ করেন। পরদিন ২৭ মার্চ চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ নেতারা সেনাবাহিনীর একজন অফিসারকে দিয়ে ঘোষণাটি পাঠ করানোর সিদ্ধান্ত নেন। প্রথমে মেজর রফিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি রণাঙ্গনে ব্যস্ত থাকায় পরে কালুরঘাট অতিক্রম করে পটিয়ার দিকে যাত্রাকারী মেজর জিয়াউর রহমানকে বোয়ালখালী থেকে খুঁজে এনে ঘোষণাটি পাঠের দায়িত্ব দেয়া হয়। প্রথমে তিনি ভুল পড়েছিলেন, পরেরবার শুদ্ধ করে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে ঘোষণাটি পড়েন। নতুন প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জানানোর জন্য এটি শোনানো প্রয়োজন।’

তিনি বলেন, ‘শুধু স্বাধীনতা সংগ্রামেই নয়, স্বাধীনতা পরবর্তী দেশ গঠনেও বেতার তার ভূমিকা অব্যাহত রেখেছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীসহ সারাদেশের মানুষের কাছে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতির নানা বিষয় বেতার পৌঁছে দিচ্ছে। বঙ্গোপসাগরে মাঝি-মাল্লাদের কাছে বেতারই সম্বল, পাহাড়ের চূড়াতেও বেতারই শোনা যায়। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলাতে মানুষকে স্বাস্থ্য সুরক্ষাসহ বিভিন্ন জরুরি বিষয়ে বার্তা দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বাংলাদেশ বেতার।’

এ বছর ইউনেস্কো ঘোষিত দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘নতুন বিশ্ব নতুন বেতার’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী জানান, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ বেতার এখন মোবাইল অ্যাপে শোনা যায়। এ পর্যন্ত দেশের আটটি বেতার কেন্দ্রের অনুষ্ঠান অ্যাপের আওতায় এসেছে। চট্টগ্রাম কেন্দ্রের অনুষ্ঠান দেশব্যাপী সম্প্রচার শুরু হয়েছে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান বলেন, ‘তথ্য অধিকার ও ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে বেতার অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রেখে চলেছে। এই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।’

তথ্য সচিব খাজা মিয়া দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ থেকে দেশের মানুষের কল্যাণের ব্রত নিয়ে বেতারের কর্মকর্তাদের কাজ করার জন্য আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক আহমেদ কামরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিকদের মধ্যে মনোরঞ্জন ঘোষাল, মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, প্রধান তথ্য অফিসার সুরথ কুমার সরকার, প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ, গণযোগাযোগ অধিদফতরের মহাপরিচালক বিধান চন্দ্র কর্মকার, জাতীয় গণমাধ্যমে ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাহীন ইসলাম, বাংলাদেশ বেতারের সাবেক মহাপরিচালকদের মধ্যে নেছার উদ্দীন ভুঁইয়া, হোসনে আরা তালুকদার, অতিরিক্ত মহাপরিচালক সালাহউদ্দীন আহমেদ, ঢাকা কেন্দ্রের পরিচালক কামাল আহমেদ, উপ-মহাপরিচালক (বার্তা) এসএম জাহীদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন