স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ‘ভ্যাকসিন নিয়ে কোনও সমালোচনা চাই না। দেশবাসীর জীবন রক্ষার্থে এই ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। দেশের ও সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা এই ভ্যাকসিন নিচ্ছেন। কাজেই এ নিয়ে কোনও সমালোচনা করবেন না।’
রবিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বাস্থ্য অধিদফতরে উপস্থিত হয়ে করোনার টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এসময় তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিভিন্ন জেলার সিভিল সার্জন, সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বে বর্তমানে যতগুলো ভ্যাকসিন রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ অক্সফোর্ডের এস্ট্রাজেনেকার এই তৈরি এই টিকা। আগামী জুন নাগাদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোভ্যাক্স থেকে টিকা চলে আসবে। এই টিকাদান কর্মসূচি সারাবছর চলবে। আমরা চাই দেশবাসী স্বাভাবিকভাবে চলুক।’
টিকাদান কর্মসূচির উদ্ধোধনের সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনার টিকাদানের মাধ্যমে দেশে একটি মহৎ কাজের শুরু হলো আজ।’ এর আগে যারা টিকা নিয়েছেন তারা সবাই সুস্থ আছেন বলে জানান তিনি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, ‘গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। ১৮ মার্চ প্রথম রোগী মারা যায়। সেই থেকে আমাদের যুদ্ধ শুরু। এরপর স্ক্রিনিং শুরু হয়, আইসোলেশন সেন্টার বানানো হয়। হাসপাতলে ১৫-২০ হাজার অতিরিক্ত বেড বাড়ানো হয়। সেন্ট্রাল অক্সিজেন, আইসিইউ ও টেলি মেডিসিনের ব্যবস্থা করা হয়। এর সব কিছু মিলিয়ে আমরা সুফল পাই। তবে আমাদের ব্যবস্থার অনেক সমালোচনা হয়েছে। সব সমালোচনার উর্ধ্বে উঠে আমরা কাজ করেছি। আজ বাংলাদেশ অনেক দেশের চেয়ে ভালো আছে। আমাদের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক। কোনও হাহাকার নেই, খাবারের অভাব হয়নি, চিকিৎসার অভাব হয়নি। আজ আমাদের আনন্দের দিন।’
টিকা কার্যক্রমের উদ্বোধনের পর মন্ত্রী স্বাস্থ্য অধিদফতরে থেকে শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে যান।
এর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) সকাল ৯টায় টিকাদান কর্মসূচি হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া। তিনি জানান, প্রথমে একজন নারী বিচারপতি টিকা নিয়েছেন। এছাড়া, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এন ইনায়েতম রহিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য আব্দুস সামাদও টিকা নিয়েছেন।
বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ, অর্থাৎ ১৩ কোটি ৮২ লাখ ৪৭ হাজার ৫০৮ জন মানুষকে করোনা ভাইরাসের টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে সরকার। প্রত্যেককে দুই ডোজ করে টিকা দেওয়া হবে।
প্রাথমিকভাবে প্রথম ডোজের আট সপ্তাহ পরে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা হলেও সেখানে পরিবর্তন এসেছে। আরও আগেই দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানিয়েছেন।
গত ২৭ জানুয়ারি দেশে প্রথম করোনার টিকা প্রদান শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এর একদিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল এবং বিএসএমএমইউয়ে প্রাথমিকভাবে ৫৪১ জনকে টিকা প্রদান করা হয়।