সুন্দরী নারীদের দিয়ে টার্গেট করে অপহরণ বা জিম্মি করার জন্য ফাঁদ পাততো রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকা থেকে অস্ত্রসহ গ্রেফতারকৃত চক্রের সদস্যরা। অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, চাঁদাবাজি এবং ভয়ভীতি দেখাতে এই অপহরণ চক্রটি দলের অভিজ্ঞ নারী সদস্যদের ব্যবহার করত। চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয়ভাবে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অপরাধ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। তবে শনিবার রাতে রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা উত্তর বিভাগের একটি দল অভিযান চালিয়ে এই চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। গ্রেফতারকৃত ওই ছয়জন হলোÑ সাদেকুল ইসলাম, ইফরান, মোহাম্মদ আলী রিফাত, কুতুব উদ্দিন, মাছুম রানা ও গোলাম রাব্বি।
রোববার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) একেএম হাফিজ আক্তার এসব তথ্য জানান। এ সময় ডিএমপির ডিসি (মিডিয়া) ওয়ালিদ হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে হাফিজ আক্তার জানান, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে টার্গেটকৃত ব্যক্তিদের নারীদের দিয়ে কৌশলে আয়ত্তে নিয়ে অপহরণ করে। এরপর পরিবারের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দাবি করে। ২-৩ লাখ টাকা পেলেই তারা ভিকটিমকে ছেড়ে দেয়। তবে ভুক্তভোগীকে ছাড়ার আগে চক্রের নারী সদস্যদের দিয়ে অশ্লীল ছবি তুলে রাখে। যাতে করে পরবর্তীতে ভুক্তভোগী নিজের মানসম্মান রক্ষায় পুলিশের কাছে কোনো অভিযোগ না জানায়। এমন সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে এই চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির গোয়েন্দা (ডিবি) উত্তর বিভাগ। এরা মূলত উত্তরা, দক্ষিণখানসহ ঢাকার সুবিধামতো এলাকায় তৎপরতা চালাচ্ছিল।
হাফিজ আক্তার বলেন, ২৯ জানুয়ারি উত্তরা হাউজ বিল্ডিং এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পূর্বপাশে গাড়ির জন্য অপেক্ষমাণ এক ব্যক্তিকেও একইভাবে অপহরণ করা হয়। এরপর ওই ভুক্তভোগীর স্ত্রী ও বড় ভাইয়ের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে ৩ লাখ ৩৪ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করে। টাকা পাওয়ার পর চক্রের সদস্যরা ভিকটিমকে উত্তরার ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে ফেলে রেখে যায়। এ ঘটনায় উত্তরা পূর্ব থানায় একটি মামলা রুজু হয়। ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ডিবি উত্তরা বিভাগের একটি দল এই চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করেছে। এর আগেও এই চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
নগরবাসীদের উদ্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হাফিজ আক্তার বলেন, কেউ যদি এই চক্র বা এমন চক্রের মাধ্যমে অপহৃত হয়ে থাকেন, তবে গোপনে আমাদের কাছে আসুন। আমরা সক্রিয়ভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। তবে এই চক্রের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত চারজন ভুক্তভোগী আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।