নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ‘আপসযোগ্য’ হলো সাধারণ জখম : আইনমন্ত্রী
নিউজগার্ডেনবিডিডটকম:মন্ত্রিসভা বৈঠকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ এর ১ ধারা সংশোধন করে ধর্ষণের সাজা মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি যাবজ্জীবন রাখার প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ সময় আইনের ১১ এর ‘গ’ ধারাও সংশোধন প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর ফলে ধর্ষণে সাধারণ জখমকে (সিম্পল হার্ট) আপসযোগ্য করা হয়েছে, যা আগে আপসযোগ্য ছিল না।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানী গুলশানের নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
মন্ত্রী বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমি আপনাদেরকে বলেছিলাম যে, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ এর ১ ধারায় ধর্ষণের জন্য যে সাজা আছে, সেই ছিল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। এই আইনটা সংশোধন করে এখানে মৃত্যুদণ্ডের প্রস্তাব আজকে মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করা হয়। সেই মোতাবেক আজকে ৯ এর ১ ধারায় ধর্ষণের সাজা যাবজ্জীবনের পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমি একটি সংশোধন উত্থাপন করি। সেটা হচ্ছে ধর্ষণের শাস্তি হবে মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। যেহেতু ৯ এর ১ ধারা সংশোধণ করা হচ্ছে, এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৯ এর ৪ ধারায়ও ঠিক সেই পরিবর্তন আনা হয়েছে, সংশোধন করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন কিছুদিন আগে হাইকোর্ট বিভাগের একটি দ্বৈত বেঞ্চ নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ১১ এর ‘গ’ তে সিম্পল হার্ট ছিল, সেটা আপসযোগ্য ছিল না। সেটাকে আপসযোগ্য করার জন্য একটা নির্দেশ দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমার এ বিষয়েও বৃহস্পতিবার কথা হয়। সেই ধারাটিতেও ১১ সাধারণ জখমকে (সিম্পল হার্ট) আপসযোগ্য করা হয়েছে। এর সংশোধনী আমরা আজকের মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করেছিলাম।’
শিশু আইন, ১৯৭৪ কে নতুন করে এ সরকার ২০১৩ সালে আরেকটা শিশু আইন পাস করা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
আনিসুল হক বলেন, ‘সেখানেও আমরা সংশোধনী এনেছি। এ সকল সংশোধনে মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে এটাকে অনুমোদন করা হয়েছে। অনুমোদন করা হয়েছে এই বলে যে, এই সংশোধনীগুলোকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে ভেটিং সাপেক্ষে এবং প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন যে, যেহেতু সংসদ এখন সেশনে নেই সেজন্য এটাকে অধ্যাদেশ করার জন্য আমরা আগামীকাল রাষ্ট্রপতির আদেশ বলে এটাকে অধ্যাদেশ হিসেবে জারি করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
চলমান পুরনো ধর্ষণ মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য প্রধান বিচারপতির প্রতি আহ্বান জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, এর জন্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। পুরনো মামলার পাশাপাশি ধর্ষণের অন্যান্য মামলাও দ্রুত সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করা হবে। এদিকে সাক্ষ্য নিরাপত্তা আইন নিয়েও সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে সারাদেশে ঘটে যাওয়া ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনায় দেশব্যাপী প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন সাধারণ মানুষ। এসব কর্মসূচি থেকে সংশ্লিষ্ট আইনের পরিবর্তন এনে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার আহ্বান জানানো হয়।